ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫ ১০ চৈত্র ১৪৩১
প্রতিবন্ধী সাজিয়ে শতাধিক ব্যক্তির চাকরি দেন জেমস-মামুন
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Thursday, 18 July, 2024, 1:42 PM

প্রতিবন্ধী সাজিয়ে শতাধিক ব্যক্তির চাকরি দেন জেমস-মামুন

প্রতিবন্ধী সাজিয়ে শতাধিক ব্যক্তির চাকরি দেন জেমস-মামুন

সুস্থ লোককে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে চাকরি দিতেন প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে জড়িত মামুন ও জেমস। বিনিময়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। সম্প্রতি পিএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন বগুড়ার দুইজন।

মামুন ঢাকায় পাসপোর্ট অধিদফতরে অফিসে সহকারী হিসেবে ও জেমস ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। মামুনুর রশিদ ঢাকায় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরে অফিস সহকারী-কাম-মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত। এর আগে জেমস পিএসসিতে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় সেখান থেকে চাকরিচ্যুত হয়।

পিএসসির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের মধ্যে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাইগুনি মধ্য মণ্ডল পাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মামুনুর রশিদ (৩৫) ও একই উপজেলার নাড়িয়ামালা ইউনিয়নের দোয়ারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর ওরফে জেল্লার ছেলে নিয়ামুল হাসান ওরফে জেমস।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকায় ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত মামুন। নিয়ামুল হাসান জেমস ও মামুনুর রশিদকে গ্রেফতারের পর এক এক করে বের হয়ে আসছে অবৈধভাবে চাকরি দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন সংবাদ। এদের মাধ্যমে চাকরিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে তাদের স্ত্রী, ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি।

তবে তার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই। তার ছোট ভাই ফারুক হোসেন ও ভাইয়ের স্ত্রী রিমা সুলতানা চাকরি করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে। এ ছাড়া ওই এলাকার আব্দুল গফুর সমবায় বিভাগে, তার ভাই গোলজার রহমান আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে, জয় কবির রিকো কৃষি বিভাগে, জাহিদ হাসান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে, সাইফুল ইসলাম কৃষি অফিসে কর্মরত। এই কজনসহ অনেককেই চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন মামুন। এরা সবাই শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও তাদের অধিকাংশই চাকরি পেয়েছেন প্রতিবন্ধী কোটায়।

জেমসের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার মা ও স্বামী পরিত্যক্তা বড় বোনকে পাওয়া যায়। তারা এব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান। জেমসের চাচা আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল বলেন,  জেমসের এলাকায় তার বাবার অনেক সম্পত্তি আছে, তার অবৈধ ভাবে কিছুই করার প্রয়োজন হবে না। 

তবে আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল বলেন, জেমসের স্ত্রী বিসিএস ক্যাডার ও তার আপন বোন ও শ্যালকসহ এলাকায় খায়রুল ও হযরতসহ পাঁচজনকে জেমস চাকরি নিয়ে দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, নিজের বোন জেলিকে গণপূর্ত বিভাগে, স্ত্রী মৌসুমীকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে (এলজিইডি), শ্যালক সাঈদকে স্বাস্থ্য বিভাগের চাকরি দিয়েছেন। এ ছাড়া একই এলাকার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম স্বাস্থ্য বিভাগে, হযরত আলীকে বীজ প্রত্যয়ন অফিসে, উঞ্চুরখী গ্রামের ওয়াসিম ওরফে কালুকে কৃষি বিভাগে, সাইফুল নামের একজনকে হিসাবরক্ষণ অফিসে, ফারজানা বেগমকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে চাকরি দিয়েছেন জেমস।

এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে চাকরি দিয়েছে এবং স্ত্রীর চাকরির ক্ষেত্রে তথ্য গোপন করেছে বলেও জানা গেছে। জেমসের পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে রাজি হয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তিরা জানায়, নিজের স্ত্রী, বোন ছাড়াও শ্যালক আবু সাঈদ এবং একই এলাকার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম স্বাস্থ্য বিভাগে ও হযরত আলীসহ আরো অনেককে বিভিন্ন অফিসে চাকরি দিয়েছে।

জেমসের এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তার কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা নিয়ে ছিল কিন্ত চাকরি হয়নি। তবে জেমস টাকা ফেরত দিয়েছেন। 

তিনি আরো বলেন, জেমস প্রায় ১০-১২জনকে চাকরি দিয়েছেন। ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, কুদ্দুস মন্ডলের দোকানের পূর্ব পাশে দোয়ারপাড়া মৌজার একটি জমির মালিক ছিলেন মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে পলাশ। তাকে সরকারি চাকরি দিয়ে জেমস ওই জমি লিখে নিয়েছেন। এলাকায় অনেক কৃষি জমিও কিনেছেন জেমস।

জেলার গাবতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বিপ্লব জানান, জেমস ও মামুন একই সিন্ডিকেটের সদস্য। তাদের যোগসাজশে সুস্থ মানুষকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে সনদপত্র জোগাড় করে দিত। সেই সনদ দিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের কারণে এলাকার প্রকৃত যারা প্রতিবন্ধী তাদের চাকরি হয়নি। এ কারণেই গত বছর একটি অভিযোগ দুদকে দিয়ে তার অনুলিপি বিভিন্ন অধিদফতরে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো তদন্ত হয়নি।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status