রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরুন, ন্যায়বিচার হবে: প্রধানমন্ত্রী
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
![]() রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরুন, ন্যায়বিচার হবে: প্রধানমন্ত্রী বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি আন্দোলনকারীদের সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈয্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না।” হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড ও লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এরা যেই হোক না কেন তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “আমি আরও ঘোষণা করছি হত্যাকাণ্ডসহ যে সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সে সকল বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।” আদালতের রায়ে সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পর আবার কোটা পুনর্বহাল হলে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যশীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন গত সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচির পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা অবরোধে নামেন। তাদের ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্যে মঙ্গলবার দেশজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যায়। এতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ ছয়জন নিহত হন, আহত হন কয়েকশ মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে জাতির উদ্দেশে ভাষণে এসে প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। তাদের পরিবারের সদস্যের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “পরিবারের সদস্যদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার, সেটা আমি করব।” সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আট মিনিটের এ ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। আদালতের রায়ে কোটা বাতিলের পর হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। ”এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ থাকা স্বত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতিকারীদের সংঘাতের সুযোগ তৈরি করে দেবেন না।” কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সংঘাতের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে, উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন সরকারপ্রধান। এসব ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্তের পাশাপাশি কারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উসকে দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ”কাদের উস্কানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হল, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল তা তদন্ত করে বের করা হবে।” প্রধানমন্ত্রী বর্তমান প্রেক্ষাপটে আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাখার ওপর জোর দিয়ে বলেন, “আমি আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই সন্ত্রাসীরা যে কোনো সময় সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে তাদের ক্ষতি সাধন করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার আবেদন, তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকেন। “একইসাথে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখেন।” |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |