ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
‘স্টুডেন্ট ট্যুরিজম সিকিউরিটি নিয়ে আমার পূর্বে কেউ কাজ করেনি’
শামীম শেখ
প্রকাশ: Tuesday, 16 July, 2024, 4:36 PM
সর্বশেষ আপডেট: Tuesday, 16 July, 2024, 4:42 PM

‘স্টুডেন্ট ট্যুরিজম সিকিউরিটি নিয়ে আমার পূর্বে কেউ কাজ করেনি’

‘স্টুডেন্ট ট্যুরিজম সিকিউরিটি নিয়ে আমার পূর্বে কেউ কাজ করেনি’

ট্যুরিস্ট পুলিশ শুধু পর্যটকদের যে কোনো সমস্যা সমাধান, হয়রানি রোধ, বখাটে ও সন্ত্রাসীদের তৎপরতা প্রতিহত করেন না বরং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রত্নসম্পদ চুরি ঠেকানো এবং পর্যটন সম্পদ ধ্বংস প্রতিরোধে ২৪ ঘণ্টা নিয়োজিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ট্যুরিজমের ভেতরে যদি টেররিজমের আশঙ্কা থাকে তাহলে ট্যুরিজম এক্সপ্লোর হবে না। সম্প্রতি নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ আওয়ার্ড ২০২৪ পেয়েছেন ঢাকা রিজিয়ন, ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হক পিপিএম। নতুন সময়কে দেয়া সাক্ষাৎকারটি পাঠকের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো।

নতুন সময় : আপনি ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি হিসেবে যোগদানের পর কী কী বিষয় পরিবর্তন এনেছেন? 

নাইমুল হক: ঢাকা রিজিয়নে প্রচুর পরিমাণে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে যেখানে দেশ-বিদেশের অনেক ট্যুরিস্ট আসে। পূর্বে এই  স্থানগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের খুব একটা দৃষ্টি ছিল না বললেই চলে। কিছু এলাকা ট্যুরিজম হিসেবে সরকার ঘোষণা করেছে যেমন কক্সবাজার কিন্তু ঢাকাকে ঐভাবে ঘোষণা করা হয়নি, তবে কিছু স্থান ঘোষণা করা আছে যেমন লালবাগের কেল্লা ও আহসান মঞ্জিল এগুলো ট্যুরিজম স্পট। কিন্তু এ সকল স্থানে ট্যুরিস্ট থাকার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। ট্যুরিস্টরা ঢাকার ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে থাকে এগুলোকে কেন্দ্র করে কাজ করছি। আমি মূলত ট্যুরিস্ট সেক্টরে তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করছি প্রথমত, সেন্স অফ সিকিউরিটি - বাংলাদেশের প্রায় ১৬০০ ট্যুরিজম স্পট আছে কিন্তু সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা মাত্র ১৩২৪ জন। একটি স্পটে ১ জনেরও কম। জনবল কম এ বিষয়টা চিন্তা করে তখন আমি সেন্স অফ সিকিউরিটি নিয়ে কাজ শুরু করি। আমি নেই কিন্তু আমার পুলিশ এখানে আছে। আমি আমার পুলিশের আকৃতি দিয়ে কিছু কাটআউট তৈরি করে এগুলো ফাইভ স্টার হোটেলের সামনে দিয়ে দেই। এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের হট লাইন নাম্বার দেওয়া রয়েছে এবং সেখানে লেখা আছে যে  ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতা নিন। টেবিল টপারগুলোতেও আমাদের মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে। দ্বিতীয়ত, স্টুডেন্ট ট্যুরিজম সিকিউরিটি এটা নিয়ে আমার পূর্বে আর কেউ কাজ করেনি। বিভিন্ন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছি ভিসি ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে স্টুডেন্টদের নিয়ে প্রোগ্রাম করছি। ট্যুরিজমের বিষয়ের উপরে তাদের সকল প্রশ্ন এবং তারা কোথায় যেতে পারবে বা কোথায় যেতে পারবে না, কি করতে পারবে বা কি করতে পারবে না টোটাল বিষয়টার উপরে সেমিনার করছি এবং এই বিষয়টার ফিডব্যাক খুব ভালোভাবেই আসছে। তৃতীয়তঃ আর একটা বিষয়ের উপর আমার কাজ চলমান টেরিজম ইন ট্যুরিজম। ট্যুরিজমের ভেতরে যদি টেররিজমের আশঙ্কা থাকে তাহলে ট্যুরিজম এক্সপ্লোর হবে না। আমাদের দেশে হলি আর্টিজান এর ঘটনার পর অনেক বিদেশি ট্যুরিস্ট এদেশে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল ।শুধুমাত্র আমাদের দেশ নয় বিশ্বের অনেক দেশেই এই টেরোরিস্টদের আক্রমণ হয়। আমি হোটেলগুলোতে ভিজিট করেছি এবং টেরোরিজম অ্যাটাক যেন না হয় সে ব্যাপারে কী কী ব্যবস্থা নিবে সে বিষয়ে তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি এবং তাদের সাথে কাজ শুরু করছি।

নতুন সময়: নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ আওয়ার্ড ২০২৪ পাওয়ার ব্যাপারে আপনার অনুভূতি কী?

নাইমুল হক: নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ আওয়ার্ড ২০২৪ আমার কাজের গতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ যদি কোন বিষয়ের উপর সম্মাননা পায় তাহলে তার কাজের প্রতি উৎসাহ বেড়ে যায় যেমনটি আমার হয়েছে। আমার আওয়ার্ডের বিষয়ে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারসহ সুশীল সমাজ প্রশংসা করেছে।

নতুন সময়:  আপনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেছেন কত সালে এবং বর্তমান কর্মস্থলে কতদিন যাবৎ আছেন?

নাইমুল হক: আমি বাংলাদেশ পুলিশে ২০০৬ সালে ২৫ তম বিসিএস এর মাধ্যমে যোগদান করি। বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করি ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে।

নতুন সময়:  পূর্বে কোথায় কোথায় কাজ করেছেন?

নাইমুল হক: ঢাকা, বরিশাল, বান্দরবান সহ অসংখ্য জায়গায় কর্মরত ছিলাম ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সে ছিলাম।২০১৫ সালে মিশনে আফ্রিকায়, ২০২১-২২ কক্সবাজার আর্ম পুলিশ ব্যাটেলিয়ান, ১৪ এপিবিএন এর কমান্ডিং অফিসার, ২০২২-২৩ খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলাম।

নতুন সময়:  ট্যুরিস্ট পুলিশে কর্মরত অবস্থায় কোন অপরাধের প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন? 

নাইমুল হক: ট্যুরিস্ট পুলিশের বাংলাদেশের মূল হার্ব কক্সবাজার সেখানে যারা ট্যুরিস্ট হিসেবে যায় তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। যেমন কিছু বিষয় লক্ষ্যণীয় ৫০ টাকার একটি পণ্য ট্যুরিস্টদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ২০০ টাকা যা অপরাধের শামিল তারপর একটা চক্র আছে যারা পাঁচটা ছবি তোলার কথা বলে ৫০ টা ছবি তুলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে, বডি মেসেজের কথা বলে ট্রেপে ফেলে। আর ঢাকার ভিতরে কিছু ইভটিজিং এর ঘটনা ঘটে।

নতুন সময়: একটি আলোচিত মামলা বা ঘটনা সম্পর্কে বলুন। 

নাইমুল হক: আমি যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলাম তখন রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। মহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের কাছে অনেক শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন, তার টার্গেট ছিল রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়া, তার স্বপ্ন ছিল রোহিঙ্গাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। এই যে তাদের অধিকারের জন্য যে আন্দোলন সে করেছিল এটা অনেকের কাছে ভালো লাগেনি বিশেষ করে দুষ্কৃতিকারীদের। এই দুষ্কৃতিকারীরা প্রি-প্লান পদ্ধতিতে তাকে হত্যা করে। তিনি  যখন তার অনুসারীদের নিয়ে তার অফিসে বসে কথা বলছিলেন তখন মহিবুল্লাহর বডিগার্ড সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে এবং সকলের সামনে তাকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে পালিয়ে যায়। এটা ছিল খুবই মর্মাহত ঘটনা। যেহেতু মহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের নেতা ছিলেন সেই কারণে বিষয়টি  একটি ইন্টারন্যাশনাল ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। তার মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সে সাক্ষাৎ করেছিল। বিভিন্ন দেশ বিদেশে তাঁর একটা গ্রহণযোগ্যতা ছিল। এই ঘটনার পর আমরা প্রচণ্ড  প্রেসারে পড়েছিলাম, আমার নেতৃত্বে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করি এবং যারা এই প্লানের সাথে জড়িত ছিল তাদেরকেও গ্রেপ্তার করি।এ বিষয়ে আমি ব্যাপকভাবে প্রশংসা পেয়েছিলাম এই ঘটনার পর আমাকে পিপিএম পদক দেওয়া হয়।

নতুন সময়: ধন্যবাদ আপনাকে।

নাইমুল হক: নতুন সময়কে ও ধন্যবাদ।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status