এবার সাকলায়েনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন পিয়া জান্নাতুল
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Tuesday, 25 June, 2024, 7:34 PM
এবার সাকলায়েনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন পিয়া জান্নাতুল
আলোচিত ও বিতর্কিত চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে চাকরি হারাতে চলেছেন গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগের সাবেক এডিসি গোলাম সাকলায়েন। তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। তারই মধ্যে সাকলায়েনের বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন পিয়া জান্নাতুল।
এই অভিনেত্রী ও মডেল গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন পরীমনির ‘প্রাক্তন প্রেমিক’ সাকলায়েনের বিরুদ্ধে। ফেসবুকে লম্বা একটি পোস্ট দিয়ে পিয়া জান্নাতুল তুলে ধরেছেন, গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগের এডিসি থাকাকালীন গোলাম সাকলায়েন কী মারাত্মক অন্যায় করেছিলেন তার পরিবারের সঙ্গে।
মঙ্গলবার দুপুরে ফেসবুক পোস্টে পিয়া লেখেন, ‘এই সেই ব্যক্তি (গোলাম সাকলায়েন), আব্বার এফআর টাওয়ার মামলায় যিনি ডিবি থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। প্রায় ৬-৭ দিন আমি আর আম্মা প্রতিদিনই আব্বাকে দেখতে ডিবি অফিসে যেতাম। এই সেই ব্যক্তি যিনি প্রতারণামূলকভাবে এবং জোরপূর্বক সিআরপিসি-এর ১৬৪ ধারার অধীনে জবানবন্দির জন্য জোরপূর্বক আব্বার সম্মতি নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।’
পিয়া আরও লেখেন, ‘আমি আব্বাকে সম্মতি না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম, কারণ তিনি এ ঘটনায় মোটেও জড়িত ছিলেন না। কিন্তু আমি ডিবি অফিসে পৌঁছার আগেই তিনি (সাকলায়েন) আব্বার কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নিয়ে পরের দিন আদালতে জমা দেন। এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং আব্বাকে আর আমাকে চুপ থাকতে বলেন। অথচ তার জানা ছিল না, আমি চুপ থাকার জন্য জন্মগ্রহণ করিনি।’
এই অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘যেদিন তিনি (সাকলায়েন) এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের জন্য জমির মালিক হিসেবে আব্বাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন, আব্বা তখন এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে, তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। তখন আব্বার বয়স ছিল ৭৭ বছরের বেশি!’
সাকলায়েন সম্পর্কে পিয়া বলেন, ‘আমার দেখা মতে, এই জনাব সাকলায়েন লোকটি অত্যন্ত তীক্ষ্ণ, প্রতিভাবান এবং ধূর্ত। কিন্তু একটা ভুল তার সবকিছু তছনছ করে দিল! যদিও আমরা মানুষের অপকর্মের জন্য তাদের ক্ষমা করে দিই, কিন্তু প্রকৃতি এবং সর্বশক্তিমান সবসময় রয়েছেন সঠিক বিচার করার জন্য।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ জুন রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন পরীমনি। ওই ঘটনায় তিনি বোট ক্লাবের চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন চৌধুরীসহ কয়েকজনকে আসামি করে সাভার থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তভার পড়েছিল সাবেক এডিসি সাকলায়েনের ওপর।
শোনা যায়, পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন যাতে তদন্ত রিপোর্ট পরীমনির পক্ষে এবং ব্যবসায়ী নাসিরের বিপক্ষে দেন, সে জন্য প্রেমের জাল পাতেন নায়িকা। সেই জালে ধরা দেন গোলাম সাকলায়েন। চলে তাদের প্রেমলীলা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে যে, সে সময় পরীমনির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন করতেন সাকলায়েন। বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) পরীমনির বাসায় তিনি অবস্থান করেছেন বলে মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট দেখেও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া ২০২১ সালের ১ আগস্ট পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের সরকারি বাসভবন রাজারবাগের মধুমতির ফ্ল্যাটে যান পরীমনি। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরে পরীমনি-সাকলায়েনকে নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ পায়। সে প্রমাণও পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
পরীমনিকাণ্ডে বিতর্ক সৃষ্টির পর প্রথমে সাকলায়েনকে ডিবি থেকে সরিয়ে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। পরে সেখান থেকে বদলি করা হয় ঝিনাইদহ ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে। এবার যাচ্ছে চাকরি। এই অবস্থায় পিয়া জান্নাতুলের ফেসবুক পোস্ট যেন সাকলায়েনের জন্য ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা’।