ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিপরিষদে জায়গা পেয়েছেন সাত নারী। এর আগের মন্ত্রিপরিষদে ১০ জন নারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। অর্থাৎ এবার মোদির মন্ত্রিপরিষদে নারীর সংখ্যা কমেছে। সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, প্রতিমন্ত্রী ভারতী পাওয়ার, সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি, দর্শনা জারদোশ, মীনাক্ষী লেখি ও প্রতিমা ভৌমিক এবার মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি।
রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তৃতীয় বারের জন্য শপথগ্রহণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তার সঙ্গে শপথ নিয়েছেন আরো ৭১ জন। মোদীর এই নতুন মন্ত্রিসভায় মোট ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রী রয়েছেন। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ৪১ জন।
এনডিএ জোটের নেতৃত্বাধীন সরকারের এবার যেসব নারী স্থান পেয়েছেন, তাদের সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
নির্মলা সীতারামন
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নির্মলা সীতারামন। লোকসভায় লড়েননি তিনি। আগের মন্ত্রিসভায় নির্মলা সীতারামন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। রোববার পূর্ণমন্ত্রী হিসাবেই শপথ নিয়েছেন তিনি। তবে এবার তাকে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে তা স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে পর পর তিনবার মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্য হলেন নির্মলা।
অন্নপূর্ণা দেবী (বিজেপি)
মোদীর তৃতীয় মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে দুইজন নারী শপথ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ঝাড়খণ্ডের অন্নপূর্ণা দেবী। তিনি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) সম্প্রদায়ের নেত্রী। ঝাড়খণ্ড এবং অবিভক্ত বিহারের মন্ত্রী ছিলেন অন্নপূর্ণা দেবী। আগে তিনি আরজেডির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঝাড়খণ্ডে বিজেপির সংগঠন তৈরিতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সাবিত্রী ঠাকুর (বিজেপি)
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ৪৬ বছর বয়সী সাবিত্রী ঠাকুর। মধ্যপ্রদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এই নেত্রী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ধার আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১৯ সালের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। তবে তখন তিনি মনোনয়ন পাননি।
নিমুবেন বামভানিয়া (বিজেপি)
গুজরাটে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হওয়া তিন নারীর একজন নিমুবেন বামভানিয়া। গতকাল তাকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। ভাবনগর আসনে আম আদমি পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বী উমেশ মাকওয়ানাকে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন ৫৭ বছর বয়সী এই নারী।
সাবেক এই শিক্ষক ২০০৯-১০ ও ২০১৫-১৮—এ দুই মেয়াদে ভাবনগরের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বিজেপির নারী মোর্চা রাজ্যের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
রক্ষা খারসে (বিজেপি)
সাবেক বিজেপি নেতা এবং মহারাষ্ট্রের তিনবারের এমপি একনাথ খারসের পুত্রবধূ রক্ষা খারসে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। ২০১৩ সালে স্বামী নিখিল মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে এনসিপি নেতা মনীশ জৈনর কাছে সামান্য ব্যবধানে হারার পর আত্মহত্যা করেন। এরপর ২০১৪ সালে রাভিরে মনীশ জৈনর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন রক্ষা খারসে। ২০১৯ সালে তিনি আবারও নির্বাচিত হন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনসিপি প্রার্থী শ্রীরাম পাতিলের বিরুদ্ধে ২ লাখ ৭২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
শোভা কারান্দলাজে (বিজেপি)
ধর্মীয় চরমপন্থার কঠোর সমালোচক শোভা কারান্দলাজে এবারও মোদির মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন। আগের সরকারে কেন্দ্রীয় কৃষিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এই নেত্রী তিনবারের লোকসভা সদস্য। শোভা এবার লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু নর্থ আসনে কংগ্রেস নেতা রাজিব গৌদাকে পরাজিত করেছেন। শোভা বেঙ্গালুরুর প্রথম নারী এমপি।
অনুপ্রিয়া প্যাটেল (আপনা দল)
অনুপ্রিয়া প্যাটেল আবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদে ফিরেছেন। কুর্মি সম্প্রদায়ের এই নেত্রী প্রয়াত নেতা ও আপনা দলের প্রতিষ্ঠাতা সোনিলাল প্যাটেলের মেয়ে। অনুপ্রিয়া আগের সরকারে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সমাজবাদী পার্টির নেতা রমেশ চাঁদ বিন্দকে উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর আসনে পরাজিত করেছেন।