চট্টগ্রাম মহানগরীর কাট্টলীতে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধের কার্যক্রম পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক
ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম
|
চট্টাগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবী পূরণ করতে আগামী ২৬ মার্চ মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে প্রথমবারের মতো বীর শহিদদের স্মরণে পুস্পস্তবক অর্পণসহ শ্রদ্ধা নিবেদনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলীস্থ উত্তর কাট্টলীতে আপাততঃ ৪৫ শতক জায়গার উপর প্রস্তাবিত নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের জায়গায় অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ তৈরী কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। খবর তথ্যবিবরণীর। শনিবার ৯ মার্চ দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামালকে সাথে নিয়ে তিনি সেখানে পরিদর্শনে যান। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদি উর রহিম জাদিদ, স্টাফ অফিসার টু ডিসি মোঃ আল-আমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহমদ ও ডিসি পার্ক ইনচার্জ মোঃ আবদুর রশিদ এসময় উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ২৮ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের সময় সমুদ্রের পার্শ্ববর্তী উত্তর কাট্টলীতে ৩০ একর জায়গায় নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও যাদুঘর নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে এটির নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে। অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ তৈরী কার্যক্রম পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের অনন্য অবদান রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে এখান থেকেই স্বাধীনতার ঘোষনা দেয়া হয়। এখানে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান ও বঙ্গবন্ধুর ৬ দফাসহ অনেক কিছু চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এখানে নৌ-কমান্ডোরা কাজ করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, চট্টগ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ, স্মৃতিস্তম্ভ ও মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর তারিখে যখন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করছিলেন তখন তিনি এখানে একটি নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও যাদুঘর নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সমুদ্র পার্শ্বস্থ একটি দৃষ্টিনন্দন স্থানে ৩০ একর জায়গার উপর স্থায়ীভাবে একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও যাদুঘর করা হবে। সেটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হলে ঐ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে ৩-৫ বছর সময় লাগতে পারে। এখানে অস্থায়ীভাবে হলেও একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ হবে-এটা চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল। ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়, সেটি আমাদের মূল স্প্রিরিটের সাথে যায়না। সে জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীর প্রেক্ষিতে আমরা এখানে অস্থায়ীভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ করতে যাচ্ছি। জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে কম সময়ের মধ্যে অর্থ্যাৎ ১৭ মার্চের আগে এটির কাজ সম্পন্ন করতে পারবো এবং আগামী ২৬ মার্চ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় ইতোপূর্বে এ জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন এবং সচিব মহোদয়ের সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে, আশাকরি খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ও যাদুঘর নির্মাণের কাজ শুরু হবে। বধ্যভূমি সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে যে সকল বধ্যভূমি রয়েছে। সেগুলো সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। পাহাড়তলীর খুলশীতে যে সকল বধ্যভূমি রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মামলাজনিত কারণে এ কাজটি শেষ করতে পারেনি। এখন মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, কিছুদিনের মধ্যে চট্টগ্রামের বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |