ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ৯ মাঘ ১৪৩১
বিএসএমএমইউতে প্রথমবারের মতো টেস্টটিউব শিশুর জন্ম
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Thursday, 26 October, 2023, 12:49 AM

বিএসএমএমইউতে প্রথমবারের মতো টেস্টটিউব শিশুর জন্ম

বিএসএমএমইউতে প্রথমবারের মতো টেস্টটিউব শিশুর জন্ম

চিকিৎসা বিজ্ঞানে বড় মাইলফলক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথমবারের মতো টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয়েছে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সি-ব্লকে মা ও প্রসূতি বিভাগে প্রথম এই টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টেষ্ট টিউব নবজাতকের জন্ম নেওয়ায় উচ্ছ্বাসিত বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, বিএসএমএমইউয়ে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্মগ্রহণের মাধ্যমে আরেকটি সফলতার পালক যুক্ত হলো। নি:সন্তান দম্পতিদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে কাজ করছে বিএসএমএমইউয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগ। টেস্টটিউব নবজাতকের জন্মগ্রহণে নি:সন্তান দম্পতিদের জন্য আজকের দিনটি অনুপ্রেরণা যোগাবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ্যাত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞরা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন এন্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানু জানান, সাধারণত বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় শতকরা ৫-১০% রোগীদের আইভিএফ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়। ২০০৩ সালের ডিসেম্বর থেকে বিএসএমএমইউয়ে ইনফার্টিলিটি বিভাগ চালু হয়। তবে ২০১৯ সাল হতে টেস্টটিউব বেবির আইভিএফ পদ্ধতি পুরোদমে চালু হয়। করোনাকালীন সময়ে এই সেবা কিছুটা স্থগিত থাকে।

বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০২২ সালে পুনরায় আইভিএফ পদ্ধতি চালুর জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন এন্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর নেতৃত্বে বন্ধ্যাত্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা স্টেম সেল থেরাপি, পিআরপি থেরাপি, রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি, এআরটি, আইইউআই ও আইভিএফ সেবা দেয়া হচ্ছে।

বিএসএমএমইউ সূত্র আরও জানায়, বরিশালের এক নিঃসন্তান দম্পতি দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ্যাত্ব সমস্যা নিরসনে চিকিৎসা গ্রহণ করেও কোনো সুফল পাননি। ২০২২ সালে এই দম্পতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগে আসেন। তাদের ইভাউলিউশন শেষে আইভিএফ উইথ আইসিএসআইয়ের পরামর্শ দেয়া হয়। পরে স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে তারা এ চিকিৎসা শুরু করেন।

সূত্র আরও জানায়, যথাযথ চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জন্ম নেয়া নবজাতকের মা গর্ভধারণ করেন। নিয়মিত চেকআপে থেকে ৩৮ সপ্তাহ পর তার সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার শেষ হয়। বিএসএমএমইউ’র ইতিহাসে সফলতার নিদর্শন স্বরূপ ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯ টায় এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়।

পুরো অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করেন বিএসএমএমইউর ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানু। এ সময় অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের শিক্ষক নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, নিউনেটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা দীবা, সহযোগী অধ্যাপক (অনারারি) ডা. শাহীন আরাসহ সিজারিয়ান সেকশনে অংশ নেন ১৭ জন চিকিৎসক ও পাঁচজন নার্স।

এর আগে, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় এই ধরনের উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থার সুযোগ সবাই নিতে পারতেন না। এবার সাধারণ মানুষকে আশার আলো দেখালো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রসঙ্গত, সন্তানধারণে অক্ষম নারীর মা হওয়ার আধুনিকতম উপায় হচ্ছে ‘টেস্টটিউব বেবি’ পদ্ধতি। ১৯৭৮ সালের ২৫ জানুয়ারি ইংল্যান্ডে প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয়। এ পদ্ধতিতে স্ত্রীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয় আর স্বামীর শরীর থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়। সেই ডিম্বাণু ও শুক্রাণু নিষিক্ত করার পর কৃত্রিমভাবে ভ্রুণ সৃষ্টি করা হয়। পরে সেই ভ্রুণ স্ত্রীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। স্বাভাবিক ভ্রুণ যেভাবে গর্ভাশয়ে বেড়ে ওঠে, কৃত্রিম ভ্রুণও একইভাবে বেড়ে উঠতে থাকে। এভাবে ৯ মাস পর টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয়।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ। কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status