অন্য ধর্মের লোকজন নামাজ পড়েন না, তাদের ধর্ম ইসলাম নয় বলে।
আমার দুটো বড়ো উৎসব ঈদ। অন্য ধর্মের লোকজন ঈদের নামাজ পড়েন না। কিন্তু তারা আমার সকাল বেলার সেমাই পায়েস খেয়ে বলেন, ঈদ মোবারক!
আমার হিন্দু ধর্মের বন্ধু আছে। তারা পূজো করেন। প্রতিমাকে মাথা নত করেন। আমি করি না। কিন্তু তার পূজোর অসাধারণ আয়োজন খাবার, লাড্ডু, পিঠা, মিঠাই, নারকিলিসহ যে খাবারের প্যাকেট তারা করেন, তার জন্য আমি বলা যায়, উন্মুখ হয়ে বসে থাকি। আমি তাদের খাবার খেয়ে বলি, শুভ শারদীয়া!
শুধু খাবার খেয়ে বলি, তা নয়। দেখা হলে বলি। আজকাল অনলাইনে, মোবাইলেও প্রচুর বলা হয়।
উৎসব আমার ভালো লাগে। সেটা পূজো হোক আর ঈদই হোক। অন্যরা আমার উৎসবকে আনন্দের ভাগ মনে করলে, এতে আমার ধর্মের কোনো ক্ষতি হয় নি। বা আমার বন্ধুর ধর্মেরও কোনো ক্ষতি হয় নি। তা বিশ্বাস।
হাজার বছর আগে মানুষ ধর্মান্তিরিত হয়েছে বিভিন্ন কারণে। কিন্তু এই যুগে বাপ-মা থেকে প্রাপ্ত ধর্মই আমরা করে থাকি। যেমন আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম, আমার পূর্ব পুরুষ তথা মা-বাবা থেকে। বা অন্য ধর্মের লোকজনও তা। খুবই কম সংখ্যা পাওয়া যাবে শতকরা হিসেবে এই সময়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে।
বা মানুষ হিসেবে জন্ম হলো আজ। কাল জ্ঞান আহরণ করে সে ধর্ম গ্রহণ করেছে, তা নাহায়েতই কম।
যেহেতু বাপ-মা থেকে পাওয়া। যা বিভিন্ন কারণে এই যুগে এসে এমনভাবে নির্ধারিত হয়েছে, তা বদল বা অন্য ধর্ম গ্রহণ করা অসাধ্য প্রায়। এটা সকল ধর্মের জন্যই সত্য। কালেভদ্রে শুনি ধর্ম পরিবর্তন করার কথা। আমি এই যুগের কথা বা এইসব সময় যা আমার দেখা সময়কালকে বলছি।
আমাকে যদি কেও এসে বলে, তোমার ধর্ম ভালো না বা খারাপ। বা একটু কটু করে বলল। তখন আমার খুব খারাপ লাগবে। কারণ, যা আমি লালন করি। মনের মাঝে গেঁথে রেখেছি। দীর্ঘদিন ধারণ করি। তা নিয়ে কথা বললে, আমি রেগে যাব। উত্তেজিত হব। ঠিক তেমনি অন্য ধর্মের লোকটির জন্যও তা হবে।
ধর্ম পালন করা ভালো। তা মনকে সুন্দর করে। জীবনকে সুন্দর করে। কিন্তু অন্য ধর্মকে খোঁচা দিয়ে নয়।
আমাদের যে সন্তানরা আজ জন্ম নিল। তাকে আমাদের শিক্ষা দেয়া উচিত এই বলে, আমরা মানুষ। যে যে ধর্ম পালন করুক না কেনো আমরা যেন বলি, মানুষ হও, সবাইকে মানুষ হিসেবেই ভাব।
আমাদের সম্প্রীতি ভাল অনেক। এটা নষ্ট করতে দেয়া যাবে না। কোনো ধর্মই সম্প্রীতি নষ্ট করতে বলে না।
কুমিল্লায় যা ঘটেছে, এটি যে করেছে, সে কোনো ধর্মই বহন করে না। কারণ, ধর্ম তো সম্প্রীতি নষ্টের কথা বলে না।